ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস-২০২৫ উদযাপন

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান ময়মনসিংহঃ
একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গড়বো সযত্নে তোমায় রাখবো আগলে।এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ময়মনসিংহে যথাযোগ্য মর্যাদায় ৩৫তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকালে জেলা পরিষদের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ, ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট এ.এইচ.এম খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ ফয়সাল আহমেদ, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রাজু আহমেদ এবং ময়মনসিংহ সিনিয়র সিটিজেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব দেওয়ান তৈমুর ইয়ার চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা আপনাদের প্রতি সত্যিই আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আপনারা যাঁরা আজ ৬০, ৭০ কিংবা তারও বেশি বছর ধরে জীবন যাপন করছেন, আপনারা প্রত্যেকে এই সমাজ, এই দেশ এবং আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখে গেছেন। আপনারা আমাদের জীবনের দিশারি, আমাদের অনুপ্রেরণা। আপনাদের আশীর্বাদ ও দোয়া আমাদের পথচলার সবচেয়ে বড় শক্তি।
তিনি আরো বলেন, আমরা চাই, আপনারা সুস্থ, সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণভাবে জীবন কাটান। আর আমরা, নতুন প্রজন্ম হিসেবে, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনারা যে সমাজ, যে দেশ গড়ে গেছেন, আমরা তা আরও সুন্দর, মানবিক ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আমরা আপনাদের মতোই একদিন এই পৃথিবীকে ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ ও সততার সঙ্গে রেখে যেতে পারি।
পুলিশ সুপার তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে সমাজবিজ্ঞানে শিখেছি বাবা, মা, ভাই-বোনকে নিয়েই পরিবারের সংজ্ঞা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সমাজব্যবস্থা ও পারিবারিক কাঠামো ক্রমেই পরিবর্তিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনের ভেতরেও আমাদের একটি বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে, বাবা-মা কোনো ভাগাভাগির বিষয় নয়।
এক সন্তান বলবে, আমি বাবাকে রাখব, আরেকজন বলবে, আমি মাকে রাখব, এটা যেন কখনো না ঘটে। বাবা-মা আমাদের ভালোবাসা, দায়িত্ব ও শ্রদ্ধার কেন্দ্রবিন্দু, তাদের যত্ন নেওয়া আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। আপনারা যারা আজ এখানে প্রবীণ হিসেবে উপস্থিত আছেন, আপনাদের জীবনই আমাদের শিক্ষা। কীভাবে পরিবার, ভালোবাসা ও মূল্যবোধকে আগলে রাখতে হয়, তা আমরা আপনাদের কাছ থেকেই শিখব।
দিনটি উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালিটি বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে জেলা পরিষদের প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, প্রবীণ নাগরিক, সমাজসেবক এবং সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।