ভোলা জজ আদালতের নাজির জিলানীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল

ভোলা জেলা জজ আদালতের নাজির আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। অভিযোগ উঠেছে, নাজির পদে পদায়ন পেতে বর্তমান নাজির জিলানীকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে মানসিক চাপে ফেলে বদলি করার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে ওই চক্রটি।
এলাকা ঘুরে জানা যায় সাবেক জেলা জজ এ এইচ এম মাহমুদুর রহমানের বদলীর পরেই নাজিরের বিরুদ্ধে এমন সব ষড়যন্ত্রের জাল বোনা শুরু করেছে চক্রটি। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যা নিউজও ছাপিয়েছে এবং সাংবাদিক দিয়ে হুমকি দামকিও দিয়ে চলছে। তবে নাজির আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রমান মিলেনি তথ্যানুসন্ধানে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে আমার দেশসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা নিয়ে আদালত পাড়ায় তোলপাড় চলছে। এমন সময় বিশৃঙ্খলা ও জনস্বার্থে তথ্যানুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এসময় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিতিত্তে নাজিরের নিয়োগের বৈধতা, নিকুঞ্জ ভাড়া দেয়া এবং বিভিন্ন আর্থিক দূর্ণীতি অভিযোগ নিয়ে আদালতে তথ্যানুসন্ধান চালানো হয়। এতে আদালতে নাজিরের নিযোগের নথি দৃষ্টে দেখা যায়, নাজির আবদুল কাদের জিলানী ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখে হিসাব রক্ষক কাম-টাইপিষ্ট(উচ্চমান সহকারী) অথাৎ সেরেস্তাদার সমমানে পদে ১৫তম বেতন গ্রেড স্কেলের চাকুরীতে যোগদান করে কর্মরত থেকে ৮ বছর পর ২০০৯ সালের ১০ অক্টোবর প্রথম টাইম স্কেল প্রাপ্ত হয়ে জাতীয় বেতন স্কেল ১৪তম গ্রেড অথাৎ নাজির সমমানের বেতন স্কেলে কর্মরত থাকেন। পরবর্তীতে জিলানী একই পদে ১২ বছর কর্মরত থেকে ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে সরকারী বিধি অনুযায়ী দ্বিতীয় টাইম প্রাপ্ত হয়ে জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩(তের)তম গেড প্রাপ্ত হয়ে নাজির বা তার সমমান পদের উপরে বেতন প্রাপ্ত হন।
পরবর্তীতে পারিবারিক সমস্যার কারনে নিজ জেলা কুমিল্লায় বদলী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট কুমিল্লার আদালতে ১৩ তম বেতন স্কেলের পদ খালি না থাকায় তার বিশেষ প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে পূর্বের বেতন স্কেল ঠিক রেখে তাকে (নিম্মমান সহকারী) পদে ২০২২ সালে বদলী করেন। পরবতীতে কুমিল্লা জেলা জজ আদালত থেকে ২০২৩ সালে তাকে ভোলা জেলা জজ আদালতে একই পদে বদলী করেন। পরে জিলানী উক্ত পদে কর্মরত থেকে ভোলা জেলা জজ বরাবরে ১৩ তম গ্রেডে বহাল হওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা জজ আবেদতি বিষয়টির বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে পদায়নের নোট দেন এবং আবেদিত ব্যক্তিকে পূর্ব পদে বহাল করলে সরকারের আর্থিক কোন ক্ষতি হবেনা মর্মে উল্লেখ করে আবদুল কাদের জিলানীকে পূর্বপদে অর্থাৎ ১৩ তম বেতন স্কেলে পদায়ন করেন।
উক্ত পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় জেলা জজ আদালত অফিস পরিচালনার কথা বিবেচনা করে নাজিরের শুণ্যপদে দরখাস্ত আহবান করা হলে একমাত্র আবদুল কাদের জিলানীর একটি আবেদন পাওয়া যায়। পরে আদালতের কাজ পরিচালনার কথা বিবেচনা করে পদায়নের –বিধির –৯ নং অনুচ্ছেদের (প্রয়োজনীয় যোগ্যতা শিথির করণ) অনুযায়ী আর কোন আবেদন না পাওয়ায় উক্ত নাজির পদে আবদুল কাদের জিলানীকে নিয়োগ দেয়া হয়। উক্ত পদে কর্মরত থেকে দক্ষতা ও সুনামের সাথে শিক্ষানবিশ কাল পার করায় জিলানীকে নাজির পদে স্থায়ী করা হয়।
এদিকে জেলা জজ আদালতের ন্যায়কুঞ্জ ভাড়া দেয়ার ব্যাপারে জিলানীর বিরুদ্ধে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল তথ্যানুসন্ধানে পাওয়া যায় ন্যায়কুঞ্জ ভাড়া দেয়ার জিলানীর কোন এখতিয়ার নেই। এটি জজ ইনচার্জে দায়িত্বে রয়েছে।
অপরদিকে জিলানীর বিরুদ্ধে দূর্নীতির যে অভিযোগ করা হয়েছে অনুসন্ধান চালিয়ে তার কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি।
আদালতে কর্মচারীবৃন্দ ও একাধিক সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে ভোলা জেলা জজ আদালতে কর্মরত নাজির আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তারা বলেন, নাজির আবদুল কাদের জিলানী ন্যায় নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে কর্ম পরিচালনা করছেন।